REGISTRATION IS GOING ON 

সাবান তৈরির প্রশিক্ষণে আপনি স্বাগত

সাবান তৈরি প্রশিক্ষণের পুরো প্রক্রিয়াকে আমরা চারটি ধাপে সাজিয়েছি। সাবান তৈরির প্রস্তুতি, সাবান তৈরির প্রক্রিয়া, সাবান প্যাকেজিং ও বাজারজাতকরণ এবং যোগাযোগ ও অন্যান্য সেবা। চলুন, এ সম্পর্কে একটা স্পষ্ট ধারণা নেয়া যাক।

শুরুতেই জানা জরুরী

কোর্স প্রশিক্ষক পরিচিতি

হাতে তৈরি সাবানের স্বনামধন্য জাপানী কারিগর টি সিনোয়াত্রার সুযোগ্য শিষ্য আনিস রহমান এই কোর্সের প্রশিক্ষক। ইকেবানা ব্র্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা এবং বাংলা ন্যাচারালের কর্ণধার তিনি। ইকেবানা হ্যান্ডমেড সোপ গুনগত কারণে দেশের অনলাইন বাজারে খুব সুপরিচিত একটি নাম। এছাড়া আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে একাধিক দেশে সাবান রপ্তানীর জন্যও ইকেবানা গর্বিত ও প্রশসংসিত একটি নাম। আনিস রহমান সুদূর জাপান থেকে সাবান তৈরির কৌশল রপ্ত করে দেশে ফিরে একটা লম্বা সময়ের মধ্যে দিয়ে সাবান তৈরিতে তার নিজস্ব মুন্সিয়ানা যোগ করেছেন। আমাদের দেশের আবহাওয়া এবং আমাদের দেশের মানুষের ত্বকের ধরণ বুঝেই তিনি সাবান তৈরিতে নিজস্ব কৌশল দাঁড় করিয়েছেন। বাংলাদেশে সাবানের বার্ষিক চাহিদা ৯০ হাজার টন, যার বাজার মূল্য প্রায় চার হাজার কোটি টাকা। আনিস রহমান মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন, আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সাবানের চাহিদা পূরণে হাতে তৈরি দেশী সাবান সুপ্রতিষ্ঠিত হয়ে উঠবে এবং জাতীয় অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখবে। তার এই বিশেষ সুচিন্তা থেকেই তার এই বিশেষ উদ্যোগ- ‘সাবান তৈরি শিখুন, উদ্যোক্তা হন’।

কোর্স প্রশিক্ষক আনিস রহমান সম্পর্কে আরও তথ্য জানুন-

মোটাদাগে কোর্সের ধাপগুলো

‘সাবান তৈরি শিখুন উদ্যোক্তা হন’ কোর্সের পুরো প্রক্রিয়াকে চারটি ধাপে ভাগ করা হয়েছে।

  • সাবান তৈরির প্রস্তুতি
  • সাবান তৈরির প্রক্রিয়া
  • সাবান প্যাকেজিং ও বাজারজাতকরণ এবং
  • যোগাযোগ ও অন্যান্য সেবা

প্রথম ধাপে আমরা সাবান তৈরির উপাদান ও উপকরণ তালিকা এবং সাবান তৈরির উপযুক্ত স্থান নিয়ে বিস্তারিত জানবো। দ্বিতীয় ধাপে সাবান তৈরির কৌশল ও পুরো প্রক্রিয়া দেখতে পাবো। তৃতীয় ধাপে সাবান প্যাকেজিং এবং তা বাজারজাতকরণ নিয়ে একটা স্পষ্ট ধারণা নিতে চেষ্টা করবো। আর সবশেষ ধাপে থাকবে শিক্ষার্থীদের এসাইনমেন্টে অংশগ্রহন। এছাড়া একমাসের ফ্রি তথ্য ও যোগাযোগ সেবাসহ আরও নানা সুবিধা।

কোর্সের কপিরাইট ও দায়ভার

জাপানে গিয়ে হাতে তৈরি সাবানের স্বনামধন্য কারিগর টি সিনোয়াত্রার কাছ থেকে সাবান তৈরির মূল রসায়নটা আয়ত্ত্ব করেন কোর্স প্রশিক্ষক আনিস রহমান। এরপর দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় তিনি নানা পরীক্ষা নীরিক্ষার মধ্যে দিয়ে সাবান তৈরির নিজস্ব স্টাইল তৈরি করেছেন। লম্বা সময় ধরে নানা গবেষণার মধ্যে দিয়ে তিনি আমাদের দেশের আবহাওয়া ও ত্বকের উপযোগী সাবান প্রস্তুত প্রক্রিয়া নির্ধারণ করেছেন। সাবান তৈরির এই প্রক্রিয়া একান্তই তার অভিজ্ঞতার ফসল। আপনারা অনলাইনে এই কোর্সের যাবতীয় ভিডিও যে কোন সময়, যত খুশি ততবার দেখতে পারবেন। তবে ভিডিওগুলো কোনমতেই ডাউনলোড করা যাবে না এবং কোন উপায়ে তা পুনরায় আপলোডের চেষ্টা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গন্য হবে।

সাবান তৈরি প্রসেসগুলো

সারা পৃথিবীতে হাতে সাবান তৈরির তিন ধরণের প্রক্রিয়া খুব জনপ্রিয়। কোল্ড প্রসেস, হট প্রসেস এবং মেল্ট এন্ড পোর প্রসেস। কোল্ড প্রসেসে তেল ও লাই মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করা হয়, যা ছাঁচে ঢেলে রেখে কঠিন করা হয়। হট প্রসেসে সাবান তৈরির উপকরণগুলো গরম করে মেশানো হয় এবং তারপরে ছাঁচে ঢেলে ঠান্ডা ও কঠিন করা হয়। এবং মেল্ট এন্ড পোর প্রসেসে সাবানের বেস গলিয়ে তাতে রঙ, সুগন্ধি এবং অন্যান্য উপাদান মিশিয়ে ছাঁচে ঢালা হয়।

হট প্রসেস বনাম কোল্ড প্রসেস

কোল্ড প্রসেস সাবানের প্রধান অসুবিধা হল এটি ব্যবহারের উপযোগী হতে অনেকটা সময় (৪-৬ সপ্তাহ) প্রয়োজন। হট প্রসেসে সাবান তৈরির সময় সপোনিফিকেশন প্রক্রিয়া দ্রুত ঘটে এবং সাবান সাধারণত ১-২দিনের মধ্যে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়। তাই সাবান তৈরিতে হট ও কোল্ড প্রসেস এর তুলনামূলক বিশ্লেষণে বিজনেসবান্ধব হিসেবে হট প্রসেসই এগিয়ে।

সাবানের মৌলিক রসায়ন

সাবানের মৌলিক রসায়ন বোঝার জন্য সোপনিফিকেশন প্রক্রিয়া এবং এর বিভিন্ন উপাদান সম্পর্কে ধারণা থাকা জরুরি। সাবানের মৌলিক রসায়নটি মূলত একটি প্রাচীন প্রক্রিয়ার ওপর ভিত্তি করে তৈরি, যা সাপোনিফিকেশন (Saponification) নামে পরিচিত। এই প্রক্রিয়ায় তেল বা চর্বি (ফ্যাট) এবং ক্ষার (লাই) একসঙ্গে মিশ্রিত হয়ে সাবান ও গ্লিসারিন তৈরি করে।

Triglyceride + Lye (NaOH) → Soap (Sodium Salt of Fatty Acid) + Glycerol

সাবানে সুগন্ধি যোগের রসায়ন

বাজারে অনেক ধরণের কৃত্রিম সুগন্ধি তেল পাওয়া যায়। কিন্তু এসব তেল এলার্জিসহ ত্বকের নানা সমস্যার কারণ হতে পারে। তাই সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান থেকে প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি এসেনশিয়াল অয়েল হতে পারে সঠিক সিদ্ধান্ত। এসেনশিয়াল অয়েলের রকমফের এবং একাধিক অয়েলের মিশ্রণে সাবানের গন্ধ ও  গুনগত মানে যেমন ভিন্নতা আনে, একইসাথে সাবানের নতুন নতুন ধরণও তৈরি হয়। হট প্রসেস সাবান তৈরির সময় সুগন্ধী যোগ করার বিষয়টি একটু জটিল, তবে সঠিক সময়ে সুগন্ধী যোগ করলে তা সফলভাবে সাবানে ধারণ করা সম্ভব। সাপোনিফিকেশন প্রক্রিয়া চলাকালীন মিশ্রণটি উচ্চ তাপমাত্রায় থাকে, যা অনেক সময় সুগন্ধীর গুণমান কমাতে পারে বা সুগন্ধীকে বিলীন করে দিতে পারে।

সাবানে আকর্ষণীয় রং যোগ

গন্ধের মতো রংয়ের ব্যবহারেও কৃত্রিম ও প্রাকৃতিক দুই ধরণের উপায় আছে। স্বাভাবিকভাবেই কৃত্রিম রং ব্যবহারে সাবানের গুনগত মানে সমস্যা হতে পারে। তাই অবশ্যই প্রাকৃতিক রংয়ের ব্যবহার করতে হবে। প্রাকৃতিক রঙের উপাদান যেমন নীলের গুঁড়া, হলুদের গুঁড়া, কালো মাটি, স্পিরুলিনা, পালং শাকের গুঁড়া, অ্যাক্টিভেটেড চারকোল, ম্যাডার রুট, অ্যালকানেট রুট পাউডার, কুমড়ার গুঁড়া ইত্যাদি হালকা ওজনের তেলে মিশিয়ে সাবানে প্রাকৃতিক রং যোগ করা হয়। হাল্কা ওজনের তেল হতে পারে নারিকেল তেল। হট প্রসেস সাবানে আকর্ষণীয় রং যোগ করা সম্ভব, তবে এটি কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে কারণ সাবান মিশ্রণটি রান্নার সময় উঁচু তাপমাত্রায় থাকে। তাপমাত্রার কারণে রঙের স্থায়িত্ব এবং সমতার বিষয়টি নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ।

সাবান প্যাকেজিং ও ডিজিটাল মার্কেটিং

প্যাকেজিংয়ের জন্য আলাদা করে খরচ করার মুলধন ঘাটতি থাকলে নানা প্রাকৃতিক উপায়েও আপনি আপনার সাবানের আকর্ষণীয় চেহারা দিতে পারেন। তবে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে নিজের ব্র্যান্ডকে উপস্থাপন করতে প্যাকেজিংয়ের জন্য একটা বাজেট থাকা জরুরি। হ্যান্ডমেড সোপের বড়বাজার অনলাইন। দারাজ, রকমারি ডটকমসহ আরও অনেকগুলো স্বনামধন্য প্ল্যাটফর্মে আপনি অনলাইন বিজনেস শপ চালু করতে পারেন। এছাড়া আপনি আপনার কোম্পানির জন্য একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে বিজনেস চালিয়ে যেতে পারেন। জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউব ও ইনস্টাগ্রামসহ অন্যান্য প্লাটফর্মে আপনার সাবানের প্রচারের পাশাপাশি বিজনেসও পরিচালনা করতে পারেন।

কোর্স থেকে কি কি পাবেন?

সাবান তৈরির পূর্ণাঙ্গ অনলাইন ভিডিও ♦ ৩০+ আপলোডযোগ্য পিডিএফ ফাইল ♦ আজীবন পরামর্শ ও যোগাযোগ সেবা ♦ দুইটি সাবান রেসিপি ফ্রি!

‘সাবান তৈরি শিখুন, উদ্যোক্তা হন’

সাবান তৈরির পূর্ণাঙ্গ ভিডিওচিত্র

ভিডিওতে প্রশিক্ষক আনিস রহমান খুব সহজ সরলভাবে সাবান তৈরির কৌশল উপস্থাপন করেছেন। এর সাথে ডাউনলোডযোগ্য সাবান তৈরির লিখিত নির্দেশিকার পিডিএফ ফাইল সাবান তৈরির কৌশল অনুধাবন ও রপ্ত করতে সহায়ক হবে। এছাড়া সাবান তৈরির আদি-অন্ত জানতে থাকবে ডাউনলোডযোগ্য প্রায় ৩০টি পিডিএফ ফাইল। আপনার দক্ষতা আপনার সহায় হলে নির্দেশিকা পড়ে ও ভিডিও দেখে আপনি নিঃসন্দেহে একজন সাবান তৈরির কারিগর তথা, উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারবেন।

সাবান তৈরির প্রস্তুতি

সাবান তৈরির আগে যা যা করবেন

সাবান তৈরির পরিবেশ

সাবান তৈরির জন্য একটি নিরাপদ, পরিচ্ছন্ন এবং সুসংগঠিত পরিবেশ তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি একটি রাসায়নিক প্রক্রিয়া এবং তাতে উচ্চ তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়। এমন একটি স্থান নির্বাচন করুন যেখানে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল আছে, কারণ সাবান তৈরির প্রক্রিয়ায় ক্ষার (লাই) ব্যবহার করা হয় যা তীব্র গন্ধ ও ক্ষতিকারক ধোঁয়া তৈরি করতে পারে। এমন স্থানে কাজ করুন যেখানে শিশু বা পোষা প্রাণী প্রবেশ করতে পারে না, কারণ ক্ষার এবং গরম সাবান মিশ্রণ বিপজ্জনক হতে পারে। সাবান তৈরির স্থানের কাছাকাছি পানির উত্স থাকুন, যাতে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তা দ্রুত ধুয়ে ফেলা যায়।

সর্বেোপরি, সাবান তৈরির জন্য একটি নিরাপদ ও কার্যকরী পরিবেশ তৈরি করুন, যা কাজের মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

সাবান তৈরির সরঞ্জাম

সাবান তৈরির উপকরণগুলো সাজিয়ে গুছিয়ে হাতের কাছে রাখতে হবে। যেন প্রয়োজনের সময় ছুটোছুটি করতে না হয়। মিশ্রণ ও মাপজোখের সরঞ্জাম, তাপ সরঞ্জাম, মোল্ড ও কাটিং এবং পরিচ্ছন্নতা সরঞ্জাম সাবান তৈরির প্রক্রিয়াকে সহজ এবং কার্যকরী করে তোলে। সঠিক সরঞ্জাম এবং উপকরণ ব্যবহার করলে নিরাপত্তা এবং উৎপাদনের মান উভয়ই বজায় রাখা সম্ভব।

সাবান তৈরির উপাদান

একইভাবে সাবান তৈরিতে ব্যবহৃত উপাদানগুলোও হাতের কাছে গুছিয়ে নিন। 

১. তেল  (Oils)

তেল সাবানের প্রধান উপাদান। বিভিন্ন ধরনের তেল সাবানের গুণাগুণ নির্ধারণ করে।

২. ক্ষার (Lye) বা সোডিয়াম হাইড্রক্সাইড (Sodium Hydroxide)

সোডিয়াম হাইড্রক্সাইড (NaOH): কঠিন সাবান তৈরির জন্য প্রয়োজনীয়। এটি তেলের সাথে মিশে সাবান এবং গ্লিসারিন তৈরি করে।

৩. পানি (Water)

ডিস্টিল্ড ওয়াটার (Distilled Water) ক্ষারকে দ্রবীভূত করতে এবং সাপোনিফিকেশন প্রক্রিয়াকে শুরু করতে ব্যবহৃত হয়। ডিস্টিল্ড ওয়াটার ব্যবহার করা ভালো, কারণ এতে কোনো অমিশ্রিত উপাদান থাকে না।

 

সাবান তৈরির সময় বিশেষ সাবধানতা

সাবান তৈরির সময় নিরাপত্তা এবং সঠিক প্রক্রিয়া বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এতে উচ্চ তাপমাত্রা এবং ক্ষারীয় পদার্থ ব্যবহৃত হয়। যদি কোনোভাবে ক্ষার বা গরম সাবান ত্বকে লাগে, দ্রুত আক্রান্ত স্থানে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

সাবান তৈরির মূল প্রক্রিয়া

তেলের সঠিক পরিমাপ

সাবান তৈরির ক্ষেত্রে তেলের সঠিক পরিমাপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি সাবানের গুণগত মান এবং কার্যকারিতার ওপর প্রভাব ফেলে। বিভিন্ন তেল মিশ্রণের পরিমাণ সঠিকভাবে মাপা উচিত যাতে সাবানটি প্রয়োজনীয় গুণাবলী বজায় রাখতে পারে।

তেল গরম করা

সাবান তৈরির সময় তেল গরম করার সঠিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি সাবানের গুণগত মান এবং সাপোনিফিকেশন প্রক্রিয়ার সফলতা প্রভাবিত করতে পারে।

লাই সল্যুশনের সঠিক মিশ্রণ

সাবান তৈরিতে লাই সল্যুশনের সঠিক মিশ্রণ নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি সাবানের সাফল্য এবং নিরাপত্তার জন্য মৌলিক ভূমিকা পালন করে। সাধারণভাবে, লাই সল্যুশনের জন্য লাই এবং পানির অনুপাত ১:২ থেকে ১:৩ হতে পারে। লাই এবং পানির মিশ্রণ ভালোভাবে নেড়ুন যতক্ষণ না লাই সম্পূর্ণরূপে দ্রবীভূত হয় এবং একটি পরিষ্কার সল্যুশন তৈরি হয়। এটি কিছুটা গরম হতে পারে, তাই এটি সঠিক তাপমাত্রায় আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। লাই সল্যুশন প্রস্তুত করার পর এটি ঠাণ্ডা হতে দিন যাতে এটি তেল মিশ্রণের সাথে মিশ্রিত করার জন্য প্রস্তুত হয়।

লাই ও তেলের মিশ্রণ

তাপমাত্রা মিলানো: লাই এবং তেলের তাপমাত্রা মিলিয়ে নিন। সাধারণভাবে, উভয়ের তাপমাত্রা ৫৫°C (১৩১°F) থেকে ৭৫°C (১৬৫°F) হওয়া উচিত। লাই তেল মিশ্রণ: লাই সল্যুশন এবং তেল একত্রিত করার সময়, লাই সল্যুশনকে ধীরে ধীরে তেলে ঢালুন। লাই তেল মিশ্রিত করার সময় সাবধান থাকুন যাতে মিশ্রণটি স্প্ল্যাশ না করে। লাই এবং তেল ভালোভাবে মিশে যাওয়ার জন্য মিশ্রণটি একটি স্টিক ব্লেন্ডার বা মিক্সার দিয়ে নেড়ুন। এটি তেল এবং লাই সাপোনিফিকেশন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।

মিশ্রণ জ্বাল দেয়ার সময় জরুরি বিষয়

তেল এবং লাই মিশ্রণ জ্বাল দেয়ার সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন। এই প্রক্রিয়াটি সাবান তৈরির মূল ধাপগুলির মধ্যে অন্যতম, এবং এটি সাবানের গুণগত মান ও নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

১. সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখা

২. মিশ্রণ সঠিকভাবে করা

৩. তাপমাত্রা মনিটরিং

৪. সেফটি প্রোটোকল

৫. নিরাপত্তা ও গুণগত মান

রঙের মিশ্রণ যোগ

সাবানে রং যোগ করার সঠিক সময় এবং তাপমাত্রা সাবানের ফিনিশিং এবং গুণগত মানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক তাপমাত্রা: রঙ যোগ করার জন্য সাধারণত সাবানের তাপমাত্রা ৫০°C থেকে ৬৫°C (১২০°F থেকে ১৪৯°F) হতে পারে। এই তাপমাত্রা রঙের কার্যকারিতা এবং গুণগত মান বজায় রাখতে সহায়ক। সাবানে ব্যবহারের জন্য বিশেষভাবে তৈরি রঙ ব্যবহার করুন, যেমন সাবান কালার বা ফুড কালার। এগুলি সাবান তৈরির জন্য উপযুক্ত এবং এতে কোনো অদৃশ্য উপাদান থাকবে না।

সুগন্ধি উপাদান যোগ

সাবান তৈরিতে সুগন্ধি উপাদান (যেমন, এসেনশিয়াল অয়েল বা ফ্রেগ্র্যান্স অয়েল) যোগ করার সঠিক সময় সাবানের গুণগত মান এবং সুগন্ধির স্থায়িত্ব নিশ্চিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সুগন্ধি উপাদান যোগ করার জন্য সাধারণভাবে সাবানের তাপমাত্রা ৫০°C থেকে ৬৫°C (১২০°F থেকে ১৪৯°F) তাপমাত্রার মধ্যে থাকা উচিত। এই তাপমাত্রায় সুগন্ধি উপাদানগুলি তাপের দ্বারা নষ্ট না হয়ে সঠিকভাবে মিশে যাবে।

মোল্ড প্রস্তুতি

মোল্ড নির্বাচন: সাবান ঢালার জন্য উপযুক্ত মোল্ড নির্বাচন করুন। সিলিকন মোল্ডস সাধারণত সহজে সাবান ছাড়ায় এবং সুন্দর ফিনিশ প্রদান করে। আপনি যদি কাস্টম আকৃতি চান, তবে বিভিন্ন ধরনের মোল্ড ব্যবহার করতে পারেন।

মোল্ড লাইনিং: যদি আপনি একটি কঠিন মোল্ড ব্যবহার করেন, মোল্ডের ভিতর প্রিটেক্টিভ লাইনিং (যেমন, প্যাচমেন্ট পেপার বা ওয়েটার প্রুফ কোটিং) ব্যবহার করুন যাতে সাবান সহজে মোল্ড থেকে বের করা যায়।

তরল সাবান মোল্ডে ঢালা

সাবান মিশ্রণটি মোল্ডে ঢালার আগে ৫৫°C থেকে ৭৫°C (১৩১°F থেকে ১৬৫°F) তাপমাত্রার মধ্যে থাকা উচিত। সাবান অত্যন্ত গরম হলে এটি মোল্ডের সীমানা পরিবর্তন করতে পারে এবং ঠাণ্ডা হলে মিশ্রণ ঘন হতে পারে।

সাবান মোল্ড মুক্ত করা ও হাতে কাটা

সাবান মোল্ড থেকে মুক্ত করার উপযুক্ত সময় এবং সাবান কাটা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা সাবানের গুণমান এবং আকৃতির সঠিকতা নিশ্চিত করে। সাবান মোল্ডে ঢালার পর, সাবানটি সম্পূর্ণভাবে ঠাণ্ডা হতে দিন। সাধারণভাবে, এটি ১২-২৪ ঘণ্টা সময় নিতে পারে। সাবান যদি গরম থাকে তবে এটি মোল্ড থেকে বের করার সময় ভঙ্গুর বা অপূর্ণ হতে পারে। সাবান মোল্ড থেকে বের করার পর, এটি সঠিকভাবে ঠাণ্ডা হতে দিন। সাধারণভাবে, সাবানটি পুরোপুরি ঠাণ্ডা হওয়ার পর কাটা উচিত।

সাবানের মান নির্ণয়

সাবানের রাসায়নিক মান নির্ণয়ের জন্য ঘরোয়া পদ্ধতিগুলি সাবানের সঠিকভাবে প্রস্তুত হওয়া এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। 

  • pH স্তরের পরীক্ষা
  • লাই পরীক্ষার পদ্ধতি
  • ফেনা তৈরির ক্ষমতা পরীক্ষা
  • ত্বক পরীক্ষার পদ্ধতি
  • সাবান জমাট বাঁধার পরীক্ষা

সবশেষে সাবানটির গন্ধ এবং চেহারা পরীক্ষা করুন। গন্ধ যদি খুব তীব্র বা অস্বাভাবিক হয়, তাহলে সাবানটি রাসায়নিকভাবে ঠিকঠাক হতে পারে না। সাবানের পৃষ্ঠতলও পরীক্ষা করুন। যদি কোনও খসখসে বা অস্বাভাবিক রঙের পরিবর্তন দেখা যায়, তাহলে সাবানটির রাসায়নিক প্রক্রিয়া সঠিক হয়নি হতে পারে।

অভিনন্দন! আপনার সাবানটি ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত!!

আপনার তৈরি করা দুইটি সাবান পাঠিয়ে দিন আমাদের ঠিকানায়। আপনার তৈরি করা সাবানটির মান নির্ণয় করে এর ভিত্তিতে আপনাকে যথাযুক্ত পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা হবে। এছাড়া প্রশিক্ষক আনিস রহমানের স্বাক্ষরকৃত একটি প্রশংসা পত্র আপনাদের প্রদান করা হবে।

সাবান প্যাকেজিং ও ডিজিটাল মার্কেটিং

বিজনেস ব্র্যান্ডিং

হাতে তৈরি সাবানের ব্যবসা শুরু করার জন্য ব্র্যান্ডিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি শক্তিশালী ব্র্যান্ড আপনার ব্যবসার পরিচিতি তৈরি করতে, গ্রাহকদের আকর্ষণ করতে, এবং দীর্ঘমেয়াদী সফলতা অর্জনে সহায়ক হতে পারে। 

১. মার্কেট পার্থক্য

২. গ্রাহক বিশ্বাস ও বিশ্বস্ততা

৩. পণ্য পরিচিতি

৪. দাম নির্ধারণ

৫. বিপণন ও প্রচারণা

৬. বাজারের প্রবৃদ্ধি

৭. গ্রাহক সেবা এবং অভিজ্ঞতা

৮. দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা

সর্বোপরি, ব্র্যান্ডিং হাতে তৈরি সাবানের ব্যবসার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি আপনার ব্যবসার পরিচিতি বাড়াতে, গ্রাহক বিশ্বাস অর্জন করতে, এবং বাজারে প্রতিযোগিতা বজায় রাখতে সহায়তা করে। একটি সুপরিকল্পিত ব্র্যান্ডিং কৌশল আপনার ব্যবসার সফলতা এবং বৃদ্ধির জন্য ভিত্তি স্থাপন করতে পারে।

সাবান প্যাকেজিং

হাতে তৈরি সাবানের ব্যবসা শুরু করার সময় প্যাকেজিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধুমাত্র সাবানের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করে না, বরং এটি আপনার ব্র্যান্ডের পরিচিতি ও বাজারের প্রভাবও বৃদ্ধি করে। 

১. প্রথম ইম্প্রেশন

২. নিরাপত্তা ও সুরক্ষা

৩. তথ্য প্রদান

৪. বিপণন ও প্রচারণা

৫. ব্র্যান্ডিং ও প্রতিযোগিতা

৬. পরিবেশবান্ধবতা

৭. খরচ ও ব্যবস্থাপনা

৮. আইনগত ও মান নিয়ন্ত্রণ

৯. গ্রাহক অভিজ্ঞতা

সর্বোপরি, হাতে তৈরি সাবানের ব্যবসায় প্যাকেজিং একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা ব্র্যান্ডের পরিচিতি বৃদ্ধি, গ্রাহক সন্তুষ্টি, এবং পণ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করে। এটি আপনার ব্যবসার সফলতা ও বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সহায়তা করে।

ডিজিটাল মার্কেটিং

হাতে তৈরি সাবানের ব্যবসার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি আপনার ব্যবসার পরিচিতি বৃদ্ধি, গ্রাহক আকর্ষণ, এবং বিক্রি বাড়াতে সাহায্য করে। হ্যান্ডমেড সোপের বড়বাজার অনলাইন। দারাজ, রকমারি ডটকমসহ আরও অনেকগুলো স্বনামধন্য প্ল্যাটফর্মে আপনি অনলাইন বিজনেস শপ চালু করতে পারেন। এছাড়া আপনি আপনার কোম্পানির জন্য একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে বিজনেস চালিয়ে যেতে পারেন। জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউব ও ইনস্টাগ্রামসহ অন্যান্য প্লাটফর্মে আপনার সাবানের প্রচারের পাশাপাশি বিজনেসও পরিচালনা করতে পারেন।

সাবান বাজারজাতকরণ

সাবান বাজারজাতকরণের আগে কয়েকটি জরুরি কাজ সারতে হবে। বিএসটিআই থেকে আপনার সাবানের মোড়ক নিবন্ধন করতে হবে। তারও আগে আপনাকে ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে। আপনি চাইলে নিজেই আপনার ব্র্যান্ডের আউটলেট খুলতে পারেন। আবার চাইলে অভিজাত মেগা স্টোরে আপনার সাবানগুলো বিক্রির জন্য দিতে পারেন। হাতে তৈরি সাবান বাজারজাতকরণের (মার্কেটিং) কৌশল আপনার পণ্যকে গ্রাহকদের কাছে পরিচিত করতে এবং বিক্রি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।

প্রচলিত সমস্যা ও সমাধান

কাজ করলে ভুল হবে, নানারকম সমস্যা হবে। উত্তেজিত না হয়ে ঠান্ডা মাথায় সেসব ভুল সংশোধন ও সমস্যার সমাধান করতে হবে। এবার সাবান তৈরির নিয়মিত ও প্রচলতি সমস্যাগুলো জানবো। একইসাথে জানবো, কি করা উচিৎ, কি করা উচিৎ না এবং কি হলে কি করবেন?

যোগাযোগ ও অন্যান্য সেবা

জরুরী পরামর্শ সেবা

 ‘সাবান তৈরি শিখুন, উদ্যোক্তা হন’ কোর্সে অংশগ্রহণকারীরা ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার গ্রুপের মাধ্যমে প্রশিক্ষকের সাথে আজীবন যুক্ত থাকতে পারবেন। এছাড়া ক্ষেত্রবিশেষে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে প্রশিক্ষকের সাথে কথা বলতে পারবেন।

সাশ্রয়ী দামে কিনুন সাবান তৈরির যত উপাদান!

বিভিন্ন ধরনের সাবান তৈরি যত উপাদান প্রয়োজন, এর সবকিছুই পাবেন আমাদের কাছে। পাইকারী ও সুলভ মূল্যে আমরা সেগুলো আপনাকে সরবরাহ করবো। 

কি মনে হচ্ছে?

কোর্সটি আপনার জন্য উপযুক্ত?

সাধ ও সাধ্যের মিল থাকলে দেরী না করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিন!

নিবন্ধন করুন

কিভাবে নিবন্ধন করবেন?

BLOG